পরিক্ষা দিতে মারধরের শিকার ছাত্রলীগের নারী নেত্রী।
রাজশাহীতে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের এক নেত্রীকে আটকের পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে তুলে দিয়েছে শিক্ষার্থীরা। রোববার (২৭ অক্টোবর) বিকেলে রাজশাহী সরকারি মহিলা কলেজ কেন্দ্রে পরীক্ষা দিতে আসলে জান্নাতুল ফেরদৌস পিয়া নামে এই নেত্রীকে পুলিশে দেওয়া হয়।
বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী মাসুদ জানান, গ্রেপ্তারকৃত ছাত্র-জনতার ওপর হামলা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি।
এদিকে, ছাত্রলীগের নেত্রী পিয়াকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাওয়ার সময়ের কয়েকটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওগুলোতে দেখা গেছে, ছাত্রলীগে নেত্রীকে মারতে মারতে পুলিশের গাড়ি পর্যন্ত নিয়ে যাচ্ছেন দুই নারী।
ভুক্তভোগী জান্নাতুল ফেরদৌস পিয়া রাজশাহী মহানগর ছাত্রলীগের পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক ও রাজশাহী কলেজের ছাত্রী।
ভুক্তভোগী জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন আমি কী ছাত্রলীগ করি বলেই কী আমার উপর এমন অমানবিক নির্যান আমাদের ও কেরিয়ার আছে আমাদেরও ভবিষ্যৎ আছে ছাত্রলীগ নেত্রীতো সবাই খারাপ না
আমরাতো তাদের পরিক্ষা বা লেখাপড়ার সুযোগ দিয়েছি আমাদের সাথে বসে নাস্তা করেছি
আমাদের সাথে কেনো এমন হচ্ছে,ছাত্রলীগের নারী নেত্রী বলেন সরকার আসবে সরকার যাবে ছাত্রদের পড়ার পরিক্ষা ও পড়ার সুযোগ করে দিবেন সকল ছাত্র ছাত্রীরা।
গত ৫ আগস্ট আওয়ামী সরকারের পতনের পর ছাত্র-জনতার ওপর হামলার অভিযোগে করা একটি মামলার এজাহারভুক্ত আসামি তিনি।
রাজশাহী সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ ড. জুবাইদা আয়েশা সিদ্দিকা জানান, জান্নাতুল ফেরদৌস পিয়া ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষের চূড়ান্ত পর্বের পরীক্ষা দিতে কলেজে এসেছিলেন। পরীক্ষা চলাকালেই একদল শিক্ষার্থী আসেন এবং তারা জানান, মামলার এজাহারভুক্ত এক আসামি পরীক্ষা দিচ্ছেন। তাকে পুলিশের হাতে তুলে দিতে হবে।
শিক্ষার্থীরা অধ্যক্ষকে একটি মামলার এজাহার দেখান, যেখানে আসামি হিসেবে পিয়ার নাম রয়েছে। এটি দেখার পর অধ্যক্ষ পুলিশে ফোন করতে চান।
শিক্ষার্থীরা জানান, তারা নিজেরাই পুলিশ ডেকেছেন।
অধ্যক্ষ জানান, শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা চলা পর্যন্ত বাইরে অপেক্ষা করেন। পরীক্ষা শেষ হলে তারা পরীক্ষা কক্ষের ভেতরে যান। এরপর সেনাবাহিনীর সহায়তায় নারী পুলিশ সদস্যরা পিয়াকে ধরে নিয়ে যায়।
এদিকে, ছাত্রলীগের নেত্রী পিয়াকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাওয়ার সময়ের কয়েকটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওগুলোতে দেখা গেছে, পরীক্ষা কেন্দ্রে অন্য পরীক্ষার্থীরা বসে আছেন। সেখানেই পিয়াকে চড় মারছেন এক নারী। পিয়া জানতে চাইছেন, ‘আমার অপরাধ কি?’
একপর্যায়ে পরীক্ষার হলেই অসুস্থ হয়ে মেঝেতে পড়ে যান পিয়া। কিছুক্ষণ পর পুলিশ আসে।
তারা যখন পিয়াকে পরীক্ষার হল থেকে বের করছিল, তখন ছাত্রলীগে নেত্রীকে মারধর করতে শুরু করেন দুই নারী। পুলিশের গাড়িতে তোলার সময় পিয়া ‘মুজিব তোমার স্মরণে, ভয় করি না মরণে’, ‘জয় বাংলা’ বলে স্লোগান দিতে শুরু করেন। পিয়াকে নিয়ে যখন পুলিশের গাড়ি কলেজ থেকে বের হচ্ছিল, তখন অনেকেই ইটপাটকেল ছুঁড়তে থাকেন।
বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী মাসুদ বলেন, ‘জান্নাতুল ফেরদৌস পিয়া ছাত্র-জনতার ওপর হামলা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। কলেজ থেকে আনার পরই তাকে মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।