পার্বত্য চট্টগ্রামে ফের সশস্ত্র উত্তেজনায়,কেএনএফ-জেএসএস সংঘাতের শঙ্কায় বিপদে আছেন বিপদে আছে আদিবাসীরা।
স্টাফ রিপোর্টার শুভ দাশ
পার্বত্য চট্টগ্রামে আবারো সশস্ত্র উত্তেজনা সৃষ্টির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ)-এর ফেসবুক পেজে রবিবার রাতে প্রকাশিত এক ঘোষণায় সংগঠনটি সরাসরি হুমকির সুরে জানিয়েছে, বুড়োগ্যছড়া, মাটিংগ্যছড়া, কবছড়ি ও লডিছড়া এলাকায় তারা ‘হেড হান্টার কমান্ডো টিম’ ও ‘ওয়াইল্ড-বোয়ার কমান্ডো টিম’ নামে দুটি সশস্ত্র স্কোয়াড মোতায়েন করে অনির্দিষ্টকালের জন্য যৌথ অভিযান চালাবে।
ওই ঘোষণায় সাধারণ জনগণকে ওইসব এলাকায় না যাওয়ার জন্য ‘নিষেধাজ্ঞা’ জারি করা হয় এবং স্পষ্ট করে বলা হয়, কেউ আদেশ অমান্য করে অপ্রীতিকর ঘটনার শিকার হলে তার দায় কেএনএফ নেবে না।
সন্দেহ করা হচ্ছে, কেএনএফ-এর এই ঘোষণাটি সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন জেএসএস-এর সশস্ত্র শাখাকে উদ্দেশ্য করে দেওয়া হয়েছে। কেএনএফ-এর দাবি, জেএসএস সশস্ত্র দল বর্তমানে আঞ্চলিক পরিষদের অর্থ বরাদ্দের অপব্যবহার করে অস্ত্র ও গোলাবারুদ সংগ্রহ করছে এবং এসব অস্ত্র-বারুদ পার্বত্য এলাকায় অশান্তি সৃষ্টির উদ্দেশ্যে পাচার করছে।
কেএনএফ তাদের পোস্টে এই তথ্যকে ‘তাদের গোয়েন্দা সূত্রে প্রাপ্ত’ দাবি করে জানিয়েছে, এসব কারণেই তারা উল্লেখিত এলাকাগুলোকে রেড জোন ঘোষণা করেছে এবং নিজেদের ভাষায় ‘শত্রু প্রতিরোধে’ অভিযানে নামছে।
সাধারণ আদিবাসীরা বলেন :পাহাড়ের সশস্ত্র বাহিনীর জন্য প্রশাসন হাতে হয়রানির শিখার হবে পার্বত্য জেলার সকল আদিবাসীরা এইতো কিছু দিন আগেও তাদেরকে ঘরে ১সাথে ৫কেজি চাউল নিতে দেয় নি সেনাবাহিনী দোষীর সাথে কি নির্দোষ আদিবাসীরা জেলে আছেন একজন অসুস্থ হয়ে মারা গিয়েছে,তাদের স্বার্থের কারণে সাধারণ জনগণ হুমকির মধ্যে আছে বলেন।
স্থানীয় নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা মনে করছেন, কেএনএফ ও জেএসএস-এর মধ্যে বিদ্যমান বৈরিতা নতুন করে প্রকাশ্য সংঘাতে রূপ নিতে পারে। যদি ঘোষিত অভিযান সত্য হয়, তাহলে পার্বত্য এলাকায় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির বড় ধরণের অবনতি হতে পারে।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি কেএনএফ বান্দরবান জেলার থানচি ও রুমা উপজেলায় একাধিক সশস্ত্র তৎপরতা চালিয়ে ব্যাপক আলোচনায় আসে। অপরদিকে, জেএসএস এবং ইউপিডিএফ দীর্ঘদিন ধরেই পার্বত্য অঞ্চলে নিজেদের আধিপত্য বিস্তারে সশস্ত্র কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
এখনো পর্যন্ত এই ঘোষণার ব্যাপারে প্রশাসনের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে পাহাড়ে কর্মরত আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সূত্রে জানা গেছে, তারা বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছে এবং প্রয়োজনে পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রস্তুত রয়েছে।
উল্লেখ্য, পার্বত্য অঞ্চলে সশস্ত্র সংগঠনগুলোর এমন প্রকাশ্য হুমকি এবং স্বাধীনভাবে অভিযান পরিচালনার ঘোষণা একটি গভীর নিরাপত্তা সংকেত হিসেবে দেখা হচ্ছে। পাহাড়ে দীর্ঘস্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সরকারের পক্ষ হতে যেসব উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, এসব কর্মকাণ্ড তা ব্যাহত করতে পারে।